বাংলাদেশে বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল না বলে মনে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির মতে, বিরোধী দলবিহীন সেই নির্বাচন কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়নি।
এ সময় তিনি উইকিলিসে প্রকাশিত বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে গোপন তারবার্তা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মোজেনা।
মোজেনা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল না।’
‘বিরোধী দলসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছাড়া অনুষ্ঠিত হওয়া সেই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়নি’ প্রতিবেদনের বরাতে তিনি জানন।
মার্কিন রাষ্টদূত বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত আলাপ-আলোচনা করে সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আশা করে। আর গণতান্ত্রিক দেশে কোনো সংঘাত-সহিংসতা কাম্য হতে পারে না।’
মোজেনা আরো বলেন, ‘কোনো পক্ষ থেকেই রাজনৈতিক সহিংসতা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষ করে সংখ্যালঘু নির্যাতন। এসব অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, সরকারের উচিত বিরোধী দলকে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ করে দেয়া। আর বিরোধী দলের উচিত সেই সুযোগ দায়িত্বশীলভাবে কাজে লাগানো।
বাংলাদেশের জনগণের সম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে বেগম জিয়ার সঙ্গে আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন তিনি। মোজেনা মধ্যবর্তী নির্বাচনকে একটি ভালো ধারণা আখ্যায়িত করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা বলেছেন। এটা ভালো ধারণা।’
উইকিলিকসে তারেক রহমানকে নিয়ে একটি বক্তব্য প্রকাশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা একটা ক্যালাসিফাইড ডকুমেন্ট। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই। আমার মতে, গোপন তারবার্তা অগ্রহণযোগ্য।’
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বাংলাদেশ ইস্যুতে মার্কিন সিনেটে তিনবার শুনানি হয়েছে। একটা গণতান্ত্রিক দেশ নিয়ে ঘনঘন শুনানি প্রমাণ করে বিশ্ববাসী বাংলাদেশ নিয়ে কতটা উদ্বিগ্ন। যদিও এটা আমাদের কাম্য হতে পারে না।’
বৈঠকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ছাড়াও তার উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও ড. ওসমান ফারুক উপস্থিত ছিলেন। আর মোজেনার সঙ্গে ছিলেন ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএইড)- এর নতুন মিশন প্রধান জ্যানিনা জ্যারুজেলস্কি।
