করোনা ভাইরাসে উহান হাসপাতালের পরিচালকের মৃত্যু

0
463

ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে নির্ঘুম রাত কাটনো উহানের উচ্যাং হাসপাতালের পরিচালক লিউ ঝিমিং চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এ লড়াইয়ে নেতৃত্বে থেকে সবাইকে প্রেরণা যোগাচ্ছিলেন তিনি।

প্রাণঘাতী এ ভাইরাস একসময় জেঁকে বসে তার শরীরেও। অনেক রোগী তার হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরলেও পারলেন না লিউ। হেরে গেলেন তিনি, করোনা ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে লিউ ঝিমিংয়ের প্রাণও।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়রি) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের কোনো হাসপাতালের প্রধান হিসেবে প্রথম প্রাণ গেছে লিউ’র। গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এই হাসপাতালেরই লিউ ফ্যান নামে ৫৯ বছর বয়সী এক নার্স মারা যান করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।

উচ্যাং হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, লিউয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তার সহকর্মী চিকিৎসকরা।

ওই হাসপাতালে এক চিকিৎসক বলেন, লিউ বেশ সুস্থ-সবল মানুষ ছিলেন। করোনা ভাইরাস তাকেও কেড়ে নেবে, ভাবতে পারছেন না কেউ।

তবে তার মৃত্যু নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি উচ্যাং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে নার্স লিউ ফ্যানের ‍মৃত্যুর বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, উহানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর ঘাটতি দেখা দিলে ওই নার্সও তা থেকে বঞ্চিত হন। ফলে হাসপাতালে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ভাইরাসে সংক্রমিত হন। ১৪ ফেব্রুয়ারি মারা যান তিনি।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ড. লিউ’র আগে চীনে হাই-প্রোফাইল চিকিৎসক হিসেবে মারা যান উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. লি ওয়েনলিয়াং। ভাইরাসটি সম্পর্কে আগেই সতর্ক করে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। লি ওয়েনলিয়াং সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, সার্সের মতো মহামারি আকার ধারণ করতে পারে এই নতুন ভাইরাস। তবে তখন তার সে কথায় পাত্তা দেয়নি দেশটির কর্তৃপক্ষ। পাল্টা তাকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে হুমকি দেয়া হয়।

এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নতুন করোনা ভাইরাসে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে আরও ৯৩ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে প্রদেশটির স্বাস্থ্য কমিশন। এ পর্যন্ত প্রদেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৮৬ জন। সবমিলিয়ে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৮৬৮ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৪৩৬ জন। চীনের বাইরে হংকং, তাইওয়ান, জাপান, ফিলিপাইন ও ফ্রান্সে একজন করে মোট পাঁচজন মারা গেছেন।

চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ হাজার ৬১০ রোগী। বাণিজ্য, ব্যবসা আর পণ্য পরিবহনে গতি কমায় চীনসহ বিশ্ব অর্থনীতিও এখন করোনা আক্রান্ত হয়ে ধুঁকছে।