৪২ বছরে পা দিল ইরানের ইসলামী বিপ্লব

0
510

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  ইসলামী বিপ্লবের বিজয়-বার্ষিকী: কোটি কোটি ইরানি তেহরানে ইসলামী বিপ্লবের বিজয়-বার্ষিকীর র‍্যালির ।

ইরানে ইসলামী বিপ্লবের ৪১তম বিজয়-বার্ষিকীর শোভাযাত্রায় দেশটির সর্বস্তরের কোটি কোটি জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি আবারও এবিপ্লবের প্রতি ইরানিদের সমর্থন এবং অবিচল আনুগত্য ও অঙ্গীকারবদ্ধতাকে তুলে ধরেছে।

১৯৭৯ সালের এই দিনে তথা ১১ ফেব্রুয়ারি মার্কিন মদদপুষ্ট স্বৈরতান্ত্রিক শাহ সরকারের চূড়ান্ত পতনের মধ্য দিয়ে ইরানে প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন রাজতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটে এবং ইসলাম ধর্ম-ভিত্তিক জনগণের শাসন-ব্যবস্থা চালু হয়। সেই থেকে প্রতি বছরই ‘ইয়ামুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর দিবস’ হিসেবে ঘোষিত এই দিবস পালন করে আসছে ইরানি জাতি। প্রতি বছরের মত এ বছরও  ইরানিদের এ দিবসের শোভাযাত্রার প্রধান শ্লোগান ছিল ‘ধ্বংস হোক মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ’ ও ‘ধ্বংস হোক ইসরাইল’ এবং ইসলামই বিজয়ী।

ইরানে ইসলামী বিপ্লব প্রথম থেকেই ছিল গণ-ভিত্তিক এবং ৪০ বছর পরও এই ভিত্তি অটুট থাকায় তা এই রাষ্ট্র-ব্যবস্থায় জনগণের অসাধারণ ভূমিকা ও গুরুত্বকে তুলে ধরছে। ইরানি জনগণ সব সময়ই বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহে ও স্পর্শকাতর সময়ে ময়দানে সক্রিয়ভাবে উপস্থিত থেকেছে। আর এ বিষয়টি এ বিপ্লবের নানা অভাবনীয় সাফল্যের অন্যতম প্রধান রহস্য। বিশ্বের অন্য বিপ্লবগুলোতে জনগণ এভাবে এত ব্যাপক মাত্রায় ও এত দীর্ঘকাল ধরে সক্রিয় উপস্থিতি বজায় রাখেনি।

ইরানের ইসলামী বিপ্লব ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতি ইরানিদের বেশিরভাগ জনগণের অব্যাহত আনুগত্য এবং সমর্থন মার্কিন সরকারগুলোকে আরও বিচলিত ও ক্রুদ্ধ করেছে। ফলে তারা ইরানি জনগণকে সর্বোচ্চ মাত্রায় কষ্ট দিতে ওষুধ ও ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের অমানবিক নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েই তুলেছে। কিন্তু ইরানি জনগণ মার্কিন সরকারগুলোর নানা ষড়যন্ত্র ও নজিরবিহীন সর্বোচ্চ চাপ আর নিষেধাজ্ঞাগুলোকেও ব্যর্থ করে দিচ্ছে ইসলামী সরকার ও নেতৃত্বের প্রতি আরও বেশি সংহতি দেখানোর মাধ্যমে। ইরানিদের এই ঐক্যবদ্ধ জাতীয় শক্তির মূল উৎস হল খাঁটি ইসলামী আদর্শ। ফলে ইসলামের এ বিজয় বজায় থাকবে ও তা ইসলামী বিপ্লবের অগ্রযাত্রাকে অদম্য ও দুর্বার করবে বলে নানা লক্ষণ থেকেই স্পষ্ট।

ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস্ ব্রিগেডের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি মার্কিন সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ হলে ইরান ও ইরাকসহ বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করে। মার্কিন ওই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে সোলাইমানির সঙ্গে শহীদ হয়েছিলেন ইরাকের জনপ্রিয় কমান্ডার আবু মাহদি। সেই থেকে গোটা পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সরকারের প্রতি জনগণের ঘৃণা কয়েক গুণ বেড়েছে। ফলে স্পষ্ট হল যে মার্কিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসও ইরানি সরকার ও জনগণের ঐক্যকে দুর্বল করতে এবং ইরানের আঞ্চলিক প্রভাবকে দুর্বল করতে ব্যর্থ। তাই পশ্চিম এশিয়া অঞ্চল থেকে পাততাড়ি গোটানো ছাড়া বৃদ্ধ মার্কিন দানবের সামনে অন্য কোনো পথ খোলা নেই। আগামীনির্বাচনেও জনগণের ব্যাপক উপস্থিতি ইসলামী বিপ্লবের দ্বিতীয় পর্যায়ের মহাপরিকল্পনাগুলোকে জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।